ঘি আমাদের বাসাবাড়িতে নানা ধরনের খাবারের স্বাদ ও এর গন্ধ বাড়ানোর জন্য বিশেষভাবে ব্যবহার করা হয়। আমাদের শরীরকে সুস্থ ও মনকে প্রফুল্ল রাখতে ঘি এর রয়েছে বিশেষ ভূমিকা। আমরা অনেকেই আছি যারা স্বাস্থ্য সচেতনতার কথা মাথায় রেখে ওজন বেড়ে যাওয়ার ফলে ঘি থেকে নিজেদের দূরে রাখি। সত্যি বলতে ঘি খেলেই যে ওজন বাড়বে তা নয়। আজ আমরা আপনাদের সাথে গরম ভাতে ঘি খাওয়ার উপকারিতা নিয়ে বিস্তারিত বর্ণনা করবো।
আমরা যদি অতিরিক্ত মাত্রায় ঘি গ্রহণ করি, তাহলে তখনই কেবল ঘি আমাদের শরীরের ক্ষতিসাধন করতে সক্ষম হয়। আমরা আমাদের আগের পোস্টে ঘি এর নানা উপকারিতা ও বেশি খেলে এর অপকারিতা নিয়ে তথ্যসহ ভালোভাবে আপনাদের জন্য আলোচনা করেছি। ঘি ব্যবহারের নানা উপকারিতা নিয়েও বিস্তারিত বর্ণনা করেছি।
বিভিন্ন বিখ্যাত বিশেষজ্ঞদের মতে, যখন বেশি ঘি খাওয়া হয়; তখনই সেটি আমাদের শরীরের জন্য ক্ষতিকর।
তিস্তা ফুড থেকে ১০০% খাঁটি ও নিজস্বভাবে বানানো সেরা মানের খাঁটি গাওয়া ঘি পেতে অর্ডার করতে গাওয়া ঘি এর পেইজে ভিজিট করুন অথবা +8801737084429 নম্বরে এখনই কল করুন।
গরম ভাতে ঘি খাওয়ার উপকারিতা
প্রতিদিন গরম ভাতে এক চামচ ঘি মিশিয়ে খেলে আমরা অনেক ধরনের উপকারসহ নানা রোগ থেকে মুক্তি পাবো। এজন্য উপরের বিষয়গুলো নিচে আপনাদের সুবিধার জন্য বিস্তারিত তুলে ধরছি-
শরীরের শক্তি বৃদ্ধি করে
গরম ভাতের সাথে এক চামচ ঘি খেলে শরীরে শক্তি বৃদ্ধি ও পুষ্টির যোগান দিবে। শরীরের শক্তি বাড়াতে চাইলে বিশেষ পুষ্টি উপাদানের জন্য প্রতিদিন ঘি খেতে পারেন। ঘি তে ফ্যাটের পরিমাণ বেশি থাকার কারণে নিজেদের ওজনের কথা ভেবে ও মেপে খাওয়াই ভালো। মনে রাখতে হবে, কোনো কিছুই প্রয়োজনের বেশি খাওয়া উচিত নয়।
ভিটামিনের উৎস হিসেবে
গরম ভাতের সাথে ঘি খেলে ভিটামিনের ঘাটতি পূরণ হবে যা আমাদের চোখ ও ব্রেইনের জন্য অনেক ভালো। ঘি তে ভিটামিন-এ, ভিটামিন-ই, ভিটামিন-ডি সহ আরও নানা পুষ্টি উপাদান থাকে। তাই ভিটামিনের উৎস হিসেবে ঘি ব্যবহার করা যায়।
পানিশূন্যতা দূর করে
ঘিতে থাকা ময়েশ্চারাইজার উপাদান শরীরের আর্দ্রতা বাড়িয়ে পানিশূন্যতা রোধে সহায়তা করে। যদি কোনো কারণে পানির ঘাটতি দেখা যায় তাহলে পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান করার পাশাপাশি ঘি খাওয়ার অভ্যাস বাড়াতে হবে। গরম ভাতের সাথে ঘি খেলে এর অ্যান্টিফাঙ্গাল ও অ্যান্টিভাইরাল উপাদানের জন্য পানিশূন্যতা দূর হয়।
আপনারা তিস্তা ফুড থেকে নিজেদের বানানো সেরা মানের খাঁটি ঘি পাবেন। অর্ডার করতে আমাদের ওয়েবসাইটে ঘি এর পেইজে এখনই ভিজিট করুন বা +8801737084429 এই নম্বরে কল করুন।
হজমশক্তি বাড়াতে সাহায্য করে
ঘি তে প্রচুর পরিমাণে বিউটারিক এসিড থাকে যা ইন্টেস্টাইনের ক্ষমতা বা হজমশক্তি বাড়ায়। এই ঘি শরীরের হজমশক্তি বৃদ্ধি ও পুষ্টি উপাদান শোষণে কাজ করে থাকে। গরম ভাতের সাথে অর্থাৎ কার্বোহাইড্রেট জাতীয় খাবারের সাথে ঘি খেলে শরীরের গ্লাইসেমিক ইনডেক্স অল্প হলেও কমবে যা ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য খুবই উপকারী।
শরীর সতেজ ও শীতল রাখে
গরম ভাতের সাথে ঘি খেলে শরীর ও মন সতেজ হয়ে যায়। ঘি আমাদের শরীরে এক ধরনের শীতলতা আসে। এটি প্রদাহ কমায় এবং শরীরকে শিথিল করে। এই ঘি সুস্বাদু ও শীতল প্রকৃতির হওয়ায় গরমেও ঘি খেতে পারবেন।
বাচ্চাদের ঘি খাওয়ার নিয়ম সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে আমাদের এই পোস্টটি পড়তে পারেন।
কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে সাহায্য করে
গরম ভাতের সাথে প্রতিদিন এক চামচ খালি পেটে ঘি খেলে কোষ্ঠকাঠিন্য রোগ দূর হবে। এছাড়া, পেট ফুলের যাওয়া, গ্যাসের সমস্যা, পেট ব্যাথা, ও অন্যান্য সমস্যার সমাধান করে। সকালবেলা খালি পেটে গরম পানিতে ঘি মিশিয়ে খেলে তা পাচনতন্ত্রে এক ধরনের লুব্রিকেটের মতো কাজ করে।
খাঁটি ঘি কিভাবে চিনবেন এবং ঘি খেলে ওজনের তারতম্য হয় কি না তা বিস্তারিত জানতে এখানে ক্লিক করুন।
ইমিউনিটি বুস্টার হিসেবে কাজ করে
প্রতিদিন সকালে গরম ভাতের সাথে এক চামচ ঘি খেলে শরীরে অনেক শক্তি অনুভূত হয় এবং দিনভর পরিশ্রম, কাজের চাপ সামলানো সহজ হয়ে যায়। অল্প কাজ করে বা অল্প খেঁটে যারা হাপিয়ে ওঠেন তাদের জন্য ঘি এক ধরনের ইমিউনিটি বুস্টার (Immunity Booster) হিসেবে কাজ করে। এর অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট আমাদের শরীরের যে কোন টক্সিন বা ক্ষতিকর পদার্থ দূর করে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে। ফলে শরীর চাঙ্গা হয় এবং শীতকালে সর্দি, কাশি থেকেও মুক্তি পাওয়া যায়।
হাড়ের জয়েন্টের ব্যথা কমাতে সাহায্য করে
ঘি তে প্রচুর পরিমাণে ওমেগা- ৩, অ্যান্টিঅক্সিডেন্টস থাকে এবং ক্যালসিয়ামের কারণে হাড়ের জয়েন্টের ব্যথা কমাতে সাহায্য করে। ঘি দুগ্ধজাত উপাদান হওয়ায় ক্যালসিয়ামের ঘাটতি পূরণ করে। অনেকে যারা শীতকালে গাঁটের ব্যথায় ভুগেন, তারা গরম ভাতের সাথে বা গরম পানিতে এক চামচ ঘি খেলে বেশ উপকার পাবেন।
ঘি দিয়ে রূপচর্চা
ঘি তে ভিটামিন এ এবং ফ্যাটি এসিড থাকার কারণে এক অসাধারণ ময়েশ্চারাইজার হিসেবে কাজ করে যা রূপচর্চায় কাজে আসে। ঘি খেলে ত্বকের হাইড্রেশন দীর্ঘস্থায়ী হয় এবং ত্বক শুষ্ক হয় না। গোসলের আগে ত্বকে হালকা ঘি দিয়ে মুখ ঘষলে ভালো ফল পাবেন। এছাড়া দিনে একবার গরম ভাতের সাথে ঘি মিশিয়ে খেলে শরীরের ভেতর থেকে ক্ষতিকর পদার্থ কমিয়ে ত্বককে নরম ও সুন্দর করবে।
তিস্তা ফুড থেকে আমাদের নিজেদের বানানো সেরা মানের খাঁটি ঘি অর্ডার করতে আমাদের ওয়েবসাইটে এই পেইজে এখনই ভিজিট করুন অথবা +8801737084429 এই নম্বরে কল করে আপনার অর্ডারটি নিশ্চিত করুন।
বাসায় কিভাবে খাঁটি ঘি বানাবেন তা বিস্তারিত জানতে চাইলে এখানে ক্লিক করুন।
ঘি আর মধু একসাথে খেলে কি হয়?
ঘি আর মধু একসাথে খেলে শ্বাসকষ্ট, পেটব্যথা, জ্বর, পাইলস, প্রস্রাবের সমস্যাসহ আরও নানা সমস্যা দেখা যায়। সমপরিমাণে ঘি ও মধু মেশালে একটি বিষাক্ত টক্সিনে রুপ নেয় যা শরীরে দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে এবং শ্বাসকষ্ট, পেটে অসহ্য ব্যথা, ক্যান্সারসহ নানা সমস্যা সৃষ্টি করে। ক্লোস্ট্রিডিয়াম বোটুলিনাম (Clostridium botulinum) হলো এক প্রকার ব্যাকটেরিয়া যা ক্ষতিকর টক্সিন তৈরি করে। তাই স্বাস্থ্য ভালো রাখতে এই খাবার খাওয়া উচিত নয়।
ঘরে বসে কিভাবে খাঁটি ঘি তৈরি করবেন তা জানতে আমাদের এই পোস্টটি পড়তে পারেন। আমরা ঘি বানানোর প্রস্তুত প্রণালী সম্পর্কে আলোচনা করেছি।
মুখে ঘি দিলে কি হয়?
মুখে ঘি দিলে আমাদের ত্বক নরম ও উজ্জ্বল হয়। এছাড়া, আমাদের মুখের ফ্রি র্যাডিকেলের ক্ষতি বা অক্সিডেটিভ ক্ষতি থেকে রক্ষা পায়। দিনশেষে ময়েশ্চারাইজার হিসেবে ১ চামচ ঘি দিয়ে মুখে মালিশ করতে পারেন। তবে, সরাসরি মুখে ঘি লাগানো উচিত নয়। ফেসপ্যাকের সাথে ঘি মিশিয়ে ব্যবহার করতে পারেন। মুখে সরাসরি ঘি মাখলে ফাঙ্গাল ইনফেকশনের আশঙ্কা বাড়ে।
আপনারা আমাদের সাথে কোনো বিষয়ে কথা বলতে চাইলে বা জানতে চাইলে অবশ্যই কমেন্ট করুন। আমরা উত্তর দেওয়ার যথাসাধ্য চেষ্টা করবো ইনশাআল্লাহ্।
তথ্যসূত্র
ResearchGate – Ghee-based all-purpose herbal cream of medicinal use
Times of India – 5 ways you can include ghee in the diet in a healthy way
Los Angeles Times – 7 great things to do with ghee, Indian-style clarified butter
Elizabeth Rider – What Is Ghee? Benefits & How To Cook With It
সাধারণ জিজ্ঞাসা
ঘি কি স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর?
না, ঘি স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর নয়। দৈনিক ১ থেকে ২ চামচ ঘি খেলে কোনো ক্ষতি নেই। কিন্তু, বেশি খাওয়া যাবে না।
গরম পানিতে ঘি খেলে কি হয়?
ঘি তে থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ও চর্বি দ্রবণীয় ভিটামিন বেশি থাকায় নিয়মিত গরম পানিতে ঘি খেলে শরীরে বিভিন্ন ক্ষতিকর সংক্রমণ এবং অসুস্থতা প্রতিরোধ করার ক্ষমতা বাড়ায়, ত্বক ভালো রাখে, হজমশক্তি উন্নত করে।
প্রতিদিন কতটুকু ঘি খেলে ওজন বাড়ে?
প্রতিদিন ২ থেকে ৩ চামচ ঘি খেলে ওজন বাড়বে। ঘি একটি সুষম খাবার হওয়ায় প্রোটিনের মাত্রা বাড়ানোর কারণে ওজন বৃদ্ধি হবে। কিন্তু, এর পাশাপাশি সঠিক নিয়ম মেনে ব্যায়ামের মাধ্যমে আপনি ওজন বাড়লেও টা নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারবেন।
খালি পেটে কতটুকু ঘি?
খালি পেটে ১ চামচ পরিমাণ বা ৫ মিলিলিটার থেকে ১০ মিলিলিটার পর্যন্ত ঘি খাওয়া যায়।