খেজুর আমাদের জন্য ফলের মধ্যে একটি আশীর্বাদ। এই খেজুর খাওয়ার উপকারিতা অনেক বেশি। বয়স্ক লোক হোক কিংবা যুবক অথবা শিশু, খেজুর খাওয়ার উপকারিতা বলে শেষ করা যাবে না। এতে থাকা বিভিন্ন পুষ্টি উপাদান যেমন ম্যাগনেসিয়াম, সালফার, প্রোটিন, ফাইবার, ম্যাঙ্গানিজ, ভিটামিন এ, ভিটামিন ডি, আয়রন ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ছাড়াও অনেক উপাদান রয়েছে। আমরা আমাদের অন্য পোস্টে খেজুরের পুষ্টিগুণ নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেছি। আপনি সেখান থেকে আরও ভালো ধারণা পাবেন।
আমাদের তিস্তা ফুডে আপনি বাজারের সেরা মানের খেজুর পাবেন। আমরা আপনাকে ১০০ ভাগ খাঁটি মধু দেবার প্রতিশ্রুতি দিয়ে থাকি। আমাদের থেকে খেজুর কিনতে পেইজে ভিজিট করুন অথবা +8801737084429 নম্বরে কল করে আপনার মূল্যবান অর্ডারটি নিশ্চিত করুন।
খেজুর খাওয়ার উপকারিতা
খেজুর খাওয়ার ফলে যেমন শরীর ভালো থাকে, তেমনি আমাদের ত্বকের ও চুলের সৌন্দর্য ধরে রাখতেও সহায়তা করে। গবেষকদের মতে, সকালে খালি পেটে খেজুর খেলে সবচেয়ে বেশি উপকার পাওয়া যাবে।
মস্তিষ্কের কার্যকারিতা বাড়ায়
খেজুরে বিভিন্ন অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট যেমন ফ্ল্যাভোনয়েডস, আইসোমারটাইট ও ফেনোলিক যৌগ মস্তিষ্কের কার্যকারিতা বাড়ায়। এসব যৌগ আমাদের মস্তিষ্কের কোষগুলোকে ফ্রি র্যাডিকেলের ক্ষতি থেকে রক্ষা করে যা অক্সিডেটিভ স্ট্রেসের কারণ হতে পারে এবং ভিটামিন বি মেজাজ নিয়ন্ত্রণে বেশ সাহায্য করে। এছাড়া ভিটামিন বি-১২ ও ফোলেট নামক উপাদান আমাদের স্মৃতিশক্তি ও মনোযোগ বাড়ায়। খেজুরে বিদ্যমান আয়রন, ম্যাগনেসিয়াম ও পটাশিয়ামের মতো খনিজ পদার্থ ব্রেইনের কোষগুলো সক্রিয় রাখে এবং নিউরোট্রান্সমিটারের কার্যকারিতা বৃদ্ধিতে সহায়তা করে।
কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে
শক্ত খেজুর সারা রাত ভিজিয়ে রেখে সকালবেলা খাওয়ার আগে খেলে কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা দূর হবে। বধহজমের সমস্যায় যারা ভুগছেন, তারাও ভালো ফলাফল পাবেন। প্রতি ২০০ গ্রাম খেজুরে প্রায় ১৩.৪ গ্রাম ফাইবার থাকার কারণে কোষ্ঠকাঠিন্য ও বদহজমের সমস্যা দূর করা যায়।
হিমোগ্লোবিনের পরিমাণ বাড়ায়
খেজুরের আয়রন আমাদের শরীরের রক্তে হিমোগ্লোবিন বাড়ায় এবং রক্ত সরবরাহ বৃদ্ধি করে। খেজুরে যে আয়রন পাওয়া যায়, তা প্রতি ২০০ গ্রামে প্রায় ১.৮ মিলিগ্রাম। আয়রনের পরিমাণে ঘাটতি থাকলে অ্যানিমিয়া বা রক্তশূন্যতা হয়। ভিটামিন সি এর অভাবের কারণেরও রক্তশূন্যতা হতে পারে। খেজুর ফোলেটের একটি ভালো উৎস হওয়ার কারণে এবং ২০-২৫ মিলিগ্রাম ম্যাগনেসিয়াম, ভিটামিন বি উপাদান ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট শরীরের লাল রক্ত কনিকা তৈরিতে ও হিমোগ্লোবিনের স্তর বজায় রাখতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
শারীরিক সক্ষমতা বৃদ্ধি করতে মধু খাওয়ার বিশেষ উপকারিতা জানতে এখানে ক্লিক করুন।
হার্টের সমস্যা দূর করে
প্রতিদিন সকাল বেলা খাওয়ার আগে খালি পেটে খেজুর খেয়ে নিলে হার্টের সমস্যা দূর করতে সাহায্য করে। যারা হার্টের সমস্যায় ভুগছেন, তারা খেজুর খাওয়ার ফলে ভালো উপকার পাবেন। উচ্চ LDL কোলেস্টেরল হৃদরোগের ঝুকির একটি প্রধান কারণ। খেজুরে বিদ্যমান ফাইবার LDL বা খারাপ কোলেস্টেরলের মাত্রা কমিয়ে হৃদরোগের ঝুঁকি কমায়। খেজুরে পটাশিয়াম রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করে, ম্যাগনেসিয়াম হৃদপেশীর কাজ করার ক্ষমতা বাড়িয়ে রক্ত জমাট বাধার ঝুঁকি কমায় এবং এর অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট রক্তনালীকে রক্ষা করে যা ধমনীর ক্ষতি এবং অ্যাথেরোস্ক্লেরোসিসের (Atherosclerosis) দিকে নিয়ে যেতে পারে। এছাড়াও ভিটামিন বি-৬, ভিটামিন কে এবং ক্যালসিয়াম সহ অন্যান্য পুষ্টি উপাদান আমাদের হৃদরোগের ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করে যা খেজুরে রয়েছে।
খুসখুসে কাশি দূর করে
খেজুরে থাকা কিছু অ্যান্টি-ব্যাকটেরিয়াল বৈশিষ্ট্য শরীরের ব্যাকটেরিয়াজনিত বিভিন্ন সংক্রমণের বিপরীতে লড়াই করে খুসখুসে কাশি থেকে রক্ষা করে। এর অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট আমাদের শ্বাসযন্ত্রের প্রদাহ কমায় এবং শ্লেষ্মা ঝিল্লির ক্ষতি থেকে রক্ষা পাওয়া যায়, যা খুসখুসে কাশির একটি কারণ। তাছাড়াও, এটি খেলে কাশির সাথে গলা ব্যথা ও বিরক্তিকর অনুভুতি দূর করে গলা শান্ত হয়। এক গ্লাস পানিতে ১ থেকে ২ টি খেজুর সারারাত ভিজিয়ে রেখে সকালে সেই গ্লাসের পানিসহ এভাবে নিয়মিত খেলে মোটামুটি ১০ থেকে ১৫ দিনের মধ্যে উপকার পাবেন।
সরিষা ফুলের মধু আমাদের কি কি উপকারে আসে তা বিস্তারিত জানতে এই পোস্টটি পড়তে পারেন।
ক্যান্সারের ঝুঁকি প্রতিরোধ করে
ফাইবারের একটি ভালো উৎস হওয়ায় খেজুর কোলনের স্বাস্থ্য উন্নত করে ও কোলন ক্যান্সারের ঝুঁকি কমায়। এর অ্যান্টি-ইনফ্ল্যামেটরি বৈশিষ্ট্য শরীরের প্রদাহ কমায়। এছাড়াও, এতে থাকা ভিটামিন এবং খনিজ আমাদের দেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে এবং ক্যান্সার কোষ শনাক্ত করে তা ধ্বংস করে। মনে রাখতে হবে যে, ক্যান্সার প্রতিরোধে খেজুর কোনো নিশ্চিত উপায় নয়। ঝুঁকি কমাতে হলে স্বাস্থ্যকর খাবার, ব্যায়াম, ধূমপান ত্যাগ করা ও নিয়মিত ডাক্তারের সাথে যোগাযোগ রাখা খুবই জরুরী।
গর্ভবতী নারীদের জন্য উপযোগী
খেজুরে থাকা ভিটামিন, খনিজ, আয়রন, পটাশিয়াম, ভিটামিন বি-৬, ফাইবার ও ফোলেট জাতীয় পদার্থ গর্ভবতী মায়ের এবং শিশুর সুস্থতার জন্য অনেক উপকারী। এই ফল গর্ভাবস্থায় উচ্চ রক্তচাপের ঝুঁকি কমায়, হজমশক্তি বৃদ্ধি করে, কোষ্ঠকাঠিন্য প্রতিরোধ করে, প্রসব বেদনা কমায় এবং শিশুর জন্য মায়ের বুকের দুধের উৎপাদনে সহায়তা করে। তবে যারা গর্ভবতী আছেন, তাদের খাওয়ার পরিমাণ নিয়ন্ত্রণে রাখা উচিত। কারণ, অতিরিক্ত খেলে রক্তে শর্করার মাত্রা বাড়ে এবং ওজন বৃদ্ধির ঝুঁকি বাড়ে। মায়েদের প্রতিদিন ২ থেকে ৩ টি করে খেজুর খেলে আপনি ভালো ফলাফল পাবেন।
শরীরের ওজন নিয়ন্ত্রণে থাকে
খেজুরের ফাইবার আমাদের ক্ষুধা কমায় এবং বেশি বেশি খাবার খাওয়া থেকে দূরে রাখে, ফলে ওজন নিয়ন্ত্রণে থাকে। নিয়মিত পানি বা দুধে ভেজানো খেজুর খেলে ওজন নিয়ন্ত্রণে চলে আসবে। খেজুর খাওয়ার উপকারিতা হিসেবে আপনি চাইলে খালিও খেতে পারেন। তাছাড়া এতে ভালো পরিমাণে ক্যালরি থাকায় ও প্রাকৃতিক চিনি অর্থাৎ শর্করার মাত্রা বেশি থাকায় অল্প খেজুর খেলেই পেট ভরে যায়। আবার বাড়াতে চাইলে বাড়াতেও পারবেন।
ত্বককে মসৃণ ও উজ্জ্বল রাখে
খেজুরের প্রাকৃতিক শর্করা ত্বককে ময়েশ্চারাইজ করে এবং ত্বককে মসৃণ ও উজ্জ্বল রাখে। এর অ্যান্টি-ইনফ্ল্যামেটরি বৈশিষ্ট্য ত্বকের প্রদাহ, লালভাব ও ফোলাভাব কমায়, এর অ্যান্টিমাইক্রোবিয়াল বৈশিষ্ট্য মুখের ব্রণ দূর করে, ভিটামিন সি ত্বককে টানটান রাখতে বা উজ্জ্বল করে এবং কুঁচকে যাওয়ার সমস্যা থেকে রক্ষা করে।
চুলের গোঁড়া মজবুত ও শক্ত করে
খেজুরে থাকা প্রোটিন চুলের গঠন ও শক্তি ধরে রাখে, আয়রন চুলের পাতলা হওয়া বা চুল পড়া কমায়, পটাশিয়াম চুলের কোষগুলো হাইড্রেটেড রাখে এবং ত্বকের শুষ্কতা রোধ করে। খেজুর খাওয়ার উপকারিতা হিসেবে অনেকে গুরুত্ব না দিলেও চুল আমাদের সৌন্দর্য বজায় রাখতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে। এতে থাকা ভিটামিন বি ও এক ধরনের তেল চুলের বৃদ্ধিতে কাজ করে।
ভালো মানের খেজুর কিনতে আমাদের দেওয়া পেইজে ভিজিট করুন অথবা +8801737084429 নম্বরে কল করে আপনার মূল্যবান অর্ডারটি নিশ্চিত করুন।
খেজুর খেলে কি ওজন বাড়ে?
হ্যাঁ। খেজুর খেলে ওজন বাড়ে। একটি খেজুর থেকে ২৩ থেকে ২৮ ক্যালরি পাওয়া যায়, ৩০/৪০ গ্রাম খেজুরে ৯২ ক্যালরি এবং ১০০ গ্রাম খেজুরে প্রায় ২৮২ ক্যালরি পরিমাণ শক্তি পাওয়া যায়। খেজুরের সাথে একগ্লাস দুধ যোগ করে নিয়মিত সকালে বা রাতে খেলে একমাসের মধ্যে শরীরের ওজন বাড়বে, কারণ অল্প খেজুর খেয়েও যথেষ্ট পরিমাণে ক্যালরি পাওয়া যাবে। এক্ষেত্রে, বড় খেজুর থেকে ৩০০ থেকে ৩৫০ ক্যালরি এবং ছোট খেজুরে প্রায় ২৫০ থেকে ২৭০ ক্যালরি শক্তি পাওয়া যাবে।
পুরুষদের জন্য খেজুরের উপকারিতা
পুরুষদের জন্য খেজুর খাওয়ার উপকারিতা অনেক বেশি। কারণ খেজুর –
দীর্ঘস্থায়ী রোগ থেকে মুক্তি দেয়
খেজুর খেলে পুরুষদের ক্যান্সার, আলঝাইমার, হৃদরোগ ইত্যাদি রোগ থেকে মুক্তি পাওয়া যায়। এর শক্তিশালী অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট বৈশিষ্ট্যের জন্যে দীর্ঘস্থায়ী রোগ থেকে মুক্তি পাওয়া যায়।
ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ করে
খেজুরের অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট বৈশিষ্ট্য ডায়াবেটিসের চিকিৎসাতে কাজে আসে। খেজুরে ম্যাগনেসিয়াম এবং ফসফরাস থাকে যা ইনসুলিন সংবেদনশীলতা বৃদ্ধি করে, যার অর্থ হল আপনার শরীর ইনসুলিনের প্রতি আরও প্রতিক্রিয়াশীল হয়ে ওঠে এবং রক্তে শর্করার মাত্রা আরও কার্যকরভাবে নিয়ন্ত্রণ করতে পারে।
পুরুষের বন্ধ্যাত্ব দূর করে
খেজুরে থাকা ফাইবার স্থুলতা ও বন্ধ্যাত্বের সমস্যা দূর করতে সহায়তা করে। খেজুর ফুলের পরাগরেণুতে যে বোরন থাকে, তা টেস্টোস্টেরনের মাত্রা বৃদ্ধিতে সাহায্য করে। মূলত টেস্টোস্টেরন হল একটি পুরুষ হরমোন যা শুক্রাণু উৎপাদন নিয়ন্ত্রণ করে। এতে থাকা জিঙ্ক শুক্রাণুর গতিশীলতা উন্নত করে এবং এর অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট শুক্রাণুর ক্ষতি থেকে রক্ষা করে।
প্রেসার নিয়ন্ত্রণ করে
খেজুরে থাকা পটাশিয়াম ও সোডিয়াম আমাদের দেহে প্রেসার বা উচ্চ রক্তচাপ কমাতে সাহায্য করে। প্রতিদিন খেজুর খেলে শরীরের খারাপ বা বাজে কোলেস্টেরল কমিয়ে ভালো কোলেস্টেরলের মাত্রা বৃদ্ধি করে। পুরুষদের খেজুর খাওয়ার উপকারিতা হিসেবে অনেক কাজে আসে।
হৃদরোগের ঝুঁকি দূর করে
আমাদের দেশে পুরুষদের হৃদরোগের বা হার্টের সমস্যায় বেশি ভুগেন। কারণ, বাজে খাদ্যাভ্যাসের কারণে শরীরে যে বাজে কোলেস্টেরল হয়, তার জন্য এই সমস্যা বেশি দেখা যায়। যদি আপনি প্রতিদিন রাতে শোওয়ার আগে একা গ্লাস পানিতে খেজুর ভিজিয়ে রেখে সকালে খান, তাহলে হার্টের সমস্যা থেকে মুক্তি পাবেন এবং হৃদপিণ্ডের কার্যক্ষমতা বৃদ্ধি পাবে। নিয়মিত এভাবে খেলে রক্তপ্রবাহ বৃদ্ধি পাবে, গতি সঞ্চার হবে এবং রোজ কাজ করার পর ক্লান্তি থেকে দূরে রাখবে।
বার্ধক্যজনিত সমস্যা প্রতিরোধ করে
পুরুষদের খেজুর খাওয়ার উপকারিতা হলো, এর ফলে ত্বকের আর্দ্রতা ফিরে আসে এবং চাকচিক্য ফিরিয়ে আনে। এছাড়াও, খেজুরে থাকা ভিটামিন সি, ভিটামিন ডি আমাদের ত্বককে শিথিল হওয়া থেকে রক্ষা করে। এর অ্যান্টি এজিং বৈশিষ্ট্য শরীরে মেলানিন বাড়তে দেয় না এবং ত্বককে দীর্ঘ সময়ের জন্য চাঙ্গা রাখে। নিয়মিত খেজুর খেলে পুরুষের ত্বক আরও ভালো হবে।
তথ্যসূত্র
Forbes Health – 5 Health Benefits Of Dates, According To Nutrition Experts
Healthline – 8 Proven Health Benefits of Dates
Cleveland Clinic – The Sweet Health Benefits of Dates
Health – Health Benefits of Dates
Good Housekeeping – 7 Top Health Benefits of Eating Dates That Make Them a Superfood
NDTV – 10 Health Benefits Of Soaked Dates
সাধারণ জিজ্ঞাসা
[sp_easyaccordion id=”3750″]