আমরা বিগত কয়েকটি ব্লগে কালোজিরা ও কালোজিরা তেলের নানা উপকারিতা, খাওয়ার নিয়ম, সকালে খেলে কি কি উপকার পাওয়া যাবে এমন অনেক কিছু নিয়ে আলোচনা করেছি যা আপনার স্বাস্থ্য সমস্যা সমাধানে অনেক বেশি সাহায্য করে থাকে। আজ আমরা আপনাদের সাথে চুলের যত্ন করার জন্য মেথি ও কালোজিরা দিলে কি হবে এবং সাথে রসুন ও কালোজিরার বিশেষ উপকারিতা নিয়ে আলোচনা করবো।
কালোজিরা তেল ও কালোজিরার বিশেষ উপকারিতা জানতে আমাদের এই পোস্টটি থেকে পড়ে নিন।
চুলের যত্নে মেথি ও কালোজিরা
চুল পড়া রোধে মেথি ও কালোজিরা খুব ভালো কাজ করে থাকে। নিচে এর কিছু উপকারিতা বিস্তারিত বর্ণনা করা হলো-
চুল পড়া রোধ করে
মেথিতে প্রচুর পরিমাণে প্রোটিন ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট থাকে। এই প্রোটিন ও অন্যান্য উপাদান চুলের মূল বা গোঁড়াকে খুব শক্তিশালী করে তোলে এবং চুল পড়া রোধ করে। কালোজিরাতে থাকা ‘থাইমোকুইনন’ নামক উপাদান চুলের গোঁড়াকে শক্ত ও মজবুত করে এবং চুল ঝরে পড়া থেকে রক্ষা করে।
মাথার চুল বৃদ্ধিতে সাহায্য করে
মাথায় মেথি ব্যবহার করলে তা রক্ত সঞ্চালন বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে এবং এর ফলে চুলের গোড়ায় পুষ্টি সরবরাহ করা হয়। পরিমাণমতো পুষ্টি উপাদান পাওয়ার ফলে চুল ঝরে পড়া কমে যাইয় এবং সাথে চুলের বৃদ্ধি হয়।
খুশকির সমস্যা দূর করে
মেথি ও কালোজিরা চুলে মাখলে বা স্কাল্প হিসেবে ব্যবহার করলে চুল শুষ্ক থাকে না এবং অনাকাঙ্ক্ষিত খুশকি থেকে সহজেই পরিত্রাণ পাওয়া যায়। কিন্তু, মেয়েদের চুলের ক্ষেত্রে নিয়মিত মেথি ও কালোজিরার মিশ্রণ নিয়ম করে মাখিয়ে শ্যাম্পু দিয়ে ধুয়ে ফেলতে হবে। স্কাল্প লাগানো অবস্থায় রোদে বের না হলে বেশ ভালো ফলাফল দেয়।
চুল ঝকঝকে ও ঘন করে
মাথায় মেথি ব্যবহার করলে মাথার চুল খুব ঝকঝকে, নরম ও পরিষ্কার হয়, সাথে চুলে মসৃণতা ফিরিয়ে আনে। সাথে কালোজিরা ব্যবহার করলে বিশেষ কোন রোগ না থাকলে মাথায় নতুন চুল গজাতে সাহায্য করে এবং চুল ঘন হয়।
কালোজিরা চিবিয়ে খেলে আপনি কি কি উপকার পাবেন তা পড়তে এই পোস্টটি দেখুন।
মেথিতে যথেষ্ট পরিমাণে পটাশিয়াম, ক্যালসিয়াম, ফলিক অ্যাসিড, প্রোটিন ও আয়রন থাকে যা চুলের বৃদ্ধিতে খুব গুরুত্বপূর্ণ সহায়তা করার পাশাপাশি চুল পড়া কমাতে এবং প্রাকৃতিক কন্ডিশনার হিসেবে ব্যবহার করা যায়। সেইরকম কালোজিরাতে কালোজিরাতে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, অ্যান্টি ব্যাকটেরিয়াল বৈশিষ্ট্যের কারণে এক থেকে দুই মাসে খুবই ভালো ফল পাওয়া যাবে।
চুলের যত্নে মেথি ও কালোজিরা ব্যবহারের নিয়ম
চুলের যত্নে মেথি ও কালোজিরার অনেক উপকার রয়েছে। তাই চুলের জন্য কালোজিরা ও মেথির রস অনেক ভালো উপাদান। এই বিশেষ উপাদানগুলো চুলের বিভিন্ন রকম পুষ্টি ও কিছু আলাদা এবং প্রয়োজনীয় অভাব মিটিয়ে থাকে। মেথিতে অনেক বেশি পরিমাণে আয়রন থাকে যা চুলের পুষ্টির জন্য এবং খুশকি দূর করার জন্য খুবই উপকারী। এই দুটির মিশ্রণ আমাদের মাথার চুল পোড়া কমাতে বেশ সক্ষম এবং ভালোভাবে গোঁড়া থেকে চুলকে বেশ কোমল ও মসৃণ করতে সাহায্য করে।
ঘি খাওয়ার নিয়ম ও পুষ্টি উপাদান সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে আমাদের এই পোস্টটি পড়ুন।
অতিরিক্ত চুল পড়া কমাতে
আপনি বাসায় চুল পড়ার সমস্যার সমাধানে বাড়িতেই ১ টি বিশেষ তেল বানিয়ে নিতে পারবেন। এজন্য আপনাকে ১ টেবিল চামচ মেথি, ৪ টি আমলকী, ১ চা চামচ কালোজিরা, ৮ থেকে ৯ টি লবঙ্গ, ১ টেবিল চামচ কারিপাতা একসাথে থেঁতো করে নিতে হবে। পরে, একটি পাত্রে প্রায় ১ লিটার নারিকেল তেল নিয়ে ওই তৈরি করে রাখা মিশ্রণটি যোগ করে অল্প আঁচে জ্বাল দিয়ে নিতে হবে। ভালোমতো মিশ্রণটি নেড়েচেড়ে নিতে হবে যাতে মিশ্রণের জলীয় অংশটি পানির সাথে সম্পূর্ণভাবে মিশে যায়। পুরোপুরি মিশে গেলে সেই মিশ্রণটি চুলা থেকে নামিয়ে ঠাণ্ডা করে ঠিকমতো ছেঁকে নিন এবং এটি কাঁচের বোতলে সংরক্ষণ করে রাখুন। কিন্তু ব্যবহারের আগে একটি স্টিলের পাত্রে তেল নিয়ে সেই মিশ্রণ গরম পানির বড় পাত্রের উপর রেখে হালকা গরম করে নিতে পারেন।
স্বাভাবিক চুলের যত্নের জন্য
আপনার চুলের স্বাভাবিক যত্ন ও বৃদ্ধির জন্য ১ টেবিল চামচ ত্রিফলার গুঁড়োর সাথে ১ টেবিল চামচ মেথি, একটি স্বাভাবিক সাইজের ডিম ও আধা কাপ দই (টক) নিয়ে সবগুলো উপকরণ একসাথে ব্লেন্ড করে একটি প্যাক বানিয়ে নিন। মাথায় প্যাক লাগানোর ঠিক আধা ঘণ্টা পর চুল শ্যাম্পু দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। চাইলে কন্ডিশনারও ব্যবহার করতে পারেন।
পিনাট বাটার খাওয়ার সেরা উপকারিতা গুলো জানতে আমাদের এই পোস্টটি পড়ে নিন।
শুষ্ক চুলের যত্নের জন্য
আপনার চুল শুষ্ক ধরনের হয়ে থাকলে ত্রিফলা, মেথি, ডিম, টক দই সেই আগের মতো সঠিক পরিমাণে নিয়ে আধা কাপ অ্যালোভেরার রস নিয়ে সবগুলো একসাথে ব্লেন্ড করে একটি প্যাক বানিয়ে আধা ঘণ্টা পরে শ্যাম্পু দিয়ে ধুয়ে ফেললে উপকার পাবেন।
প্রতি সপ্তাহে তৈরি তিসির তেল করা খুব ঝামেলার মনে হলে৩ একেবারে একটু বেশি পরিমাণে তিসি এবং সেই অনুপাতে পানি দিয়ে জ্বাল দিতে থাকুন। পরে একই নিয়মে জেল তৈরি করে কাঁচের জারে রেখে ফ্রিজে রেখে সংরক্ষণ করুন। তবে এই জেল ব্যবহারের আগে ফ্রিজ থেকে বের করে ঘরের তাপমাত্রায় এনে ব্যবহার করবেন। এছাড়াও সামান্য গরম পানিতে মিশিয়ে স্বাভাবিক তাপমাত্রায় নিয়ে আসলে ভালো উপকার পাবেন।
আমাদের থেকে কোন ধরনের পণ্য নিতে আমাদের ওয়েবসাইটে ভিজিট করে আপনার অর্ডারটি নিশ্চিত করুন অথবা +8801737084429 এই নম্বরে কল করে আপনার কিনতে চাওয়া যেকোনো পণ্য সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নিন।
রসুন ও কালোজিরার উপকারিতা
রসুনে অ্যান্টিভাইরাল ও অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল বৈশিষ্ট্য থাকায় এটি রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে। এতে পর্যাপ্ত পরিমাণে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ থাকায় এই রসুন শরীরের প্রদাহ কমাতে অনেক সাহায্য করে। সাথে মধু থাকলে এর অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল বৈশিষ্ট্য ও পুষ্টি উপাদান খুশখুশে কাশি এবং গলা ব্যথা কমাতে সাহায্য করে।
কালোজিরা ও রসুনে মধ্যে উচ্চমাত্রায় ‘অ্যালিসিন’ নামক কিছু উপাদান শরীরকে জীবাণুমুক্ত করে এবং মানুষকে সুস্থ্য করতে সাহায্য করে। এছাড়াও কালোজিরা ও রসুন খেলে মধুর সেই মধুর স্বাদ পরিবর্তন করে। কিন্তু, এক্ষেত্রে আপনার অভিজ্ঞতা ভিন্নরকমও হতে পারে।
একটি গবেষণায় দেখা গেছে, কালোজিরা ও রসুনে উচ্চমাত্রায় থাকা অ্যালিসিন শরীরকে জীবাণুমুক্ত করতে পারে, যা আমাদের শরীরের কোষগুলোকে সুরক্ষিত রাখে। কালোজিরার গুনগত উপকার থাকলেও বেশি পরিমাণে রসুন ও কালোজিরা খেলে প্রচন্ড পেট ব্যথা, কোমর ব্যথা, উচ্চ রক্তচাপের সমস্যা দেখা দিতে পারে।
পিনাট বাটার খেলে আপনার ওজন বাড়বে না কমবে সে নিয়ে বিস্তারিত জানতে আমাদের এই পোস্টটি পড়ে নিন।
জন্ডিসের সমস্যা সমাধান করে
যাদের লিভারে সমস্যা থাকে অর্থাৎ জন্ডিস রোগ রয়েছে, কালোজিরা ও রসুন খেলে এর উপস্থিত গুণাবলী লিভার পরিষ্কার রাখে। এজন্য প্রতিদিন কালোজিরা ও রসুন খেলে চিকিৎসকগণ ভালো হওয়ার সম্ভাবনা জানিয়েছেন।
ওজন কমাতে বা বাড়াতে সাহায্য করে
কালোজিরার অন্যান্য গুণাগুণের মধ্যে ওজন কমানোর জন্য কালোজিরার খুবই সুনাম রয়েছে। এর অ্যান্টি – ইনফ্লামেটারি উপাদান ওজন কমানোর জন্য খুবই বিখ্যাত।
যৌন ক্ষমতা বৃদ্ধিতে সাহায্য করে
কালোজিরা নারী পুরুষ উভয়ের যৌন ক্ষমতা বৃদ্ধিতে সাহায্য করে। প্রতিদিন খাবারের সাথে কালোজিরা মিশিয়ে খেলে পুরুষদের স্পার্মের সংখ্যা বৃদ্ধি পাবে। আর নিয়ম করে খেলে পুরুষদের পুরুষত্বহীনতা থেকে মুক্তির একটি বিশাল সম্ভাবনা দেখা যায়। ক্ষমতা বৃদ্ধির জন্য প্রতিদিন নিয়ম করে ১ থেকে ২ কোয়া কাঁচা রসুন খেলে শরীরের যৌবন দীর্ঘস্থায়ী হয়ে থাকে। এই সময়ে অ্যালকোহল, বাজে খাদ্যাভ্যাস, অনিয়ন্ত্রিত জীবনযাপন, ইত্যাদি কারণে যৌন ক্ষমতা বৃদ্ধি পেলে এসব দূর করতে নিয়ম করে কালোজিরা ও রাসুন চাইলে খেতে পারেন।
আমাদের থেকে কোন ধরনের পণ্য নিতে আমাদের ওয়েবসাইটে ভিজিট করে আপনার অর্ডারটি নিশ্চিত করুন অথবা +8801737084429 এই নম্বরে কল করে আপনার কিনতে চাওয়া যেকোনো পণ্য সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নিন।
আজ আমরা আমাদের এই ছোট পোস্টের মাধ্যমে আপনাদের সঠিকভাবে চুলের যত্নের জন্য মেথি ও কালিজিরা সম্পর্কে কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য ও ব্যবহারের নিয়ম নিয়ে বর্ণনা করেছি। এভাবেই, আমরা আপনাদের বিভিন্ন খাবার সম্পর্কে করা নানা প্রশ্নের সঠিক, তথ্যবহুল উত্তর দেওয়ার চেষ্টা করবো। পরবর্তী পোস্ট থেকে আমরা আপনাদের জন্য মেথি সম্পর্কিত নানা ধরনের প্রশ্ন এর উত্তর দেওয়ার চেষ্টা করবো।
তথ্যসূত্র
প্রথম আলো – সুস্থ থাকতে মেথি