আমরা অনেকে নিজেদের ওজন বাড়াতে চাই। এজন্য অনেকে বিভিন্ন ধরনের অপুষ্টিকর খাবার খেয়ে থাকি। তাই আমাদের উপকারের জায়গায় ক্ষতি বেশি হয়। আবার অনেকে আছি যারা এমন এক খাবার চান যা খেলে ওজনও বাড়বে, শরীরের জন্য উপকারও হবে। তার মধ্যে একটি বিষয়ে মানুষ অনেক বেশি পরিমাণে জানতে চান, সেটি হলো- “পিনাট বাটার খেলে কি ওজন বাড়ে? ওজন বাড়াতে চাইলে এই খাবার আমাদের কিভাবে কাজে আসতে পারে?” আজ আমরা আপনাদের জন্য এই বিষয়ে বিস্তারিত লিখবো।
পিনাট বাটার খেলে কি ওজন বাড়ে?
হ্যাঁ। পিনাট বাটার খেলে ওজন অবশ্যই বাড়ে। কারণ এতে প্রোটিন, ফ্যাট, ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম, ফাইবার, জিঙ্ক, ভিটামিন ই, ভিটামিন বি-৬, নিয়াসিন ইত্যাদি নানা পুষ্টিকর উপাদান থাকে যা আপনার শরীরের ওজন বৃদ্ধি বা নিয়ন্ত্রণের জন্য খুবই উপকারী। কিন্তু, স্বাস্থ্যকর ওজন বজায় রাখতে আমাদের অবশ্যই সঠিক ডায়েট, নিয়মিত ব্যায়াম এবং স্ট্রেস ম্যানেজমেন্ট এর অনুশীলন করতে হবে এবং খাদ্যাভ্যাসের দিকেও আমাদের নজর রাখতে হবে।
আমরা আগের পোস্টে বিস্তারিত লিখেছি যে পিনাট বাটার খাওয়ার উপকারিতা কতো বেশি। আমাদের সুন্দর জীবনযাপনের জন্য স্বাস্থ্যকর খাবার ও সুস্বাস্থ্য থাকা খুবই জরুরী। আর এই সুস্বাস্থ্যের জন্য আমাদের যে বিষয়ে প্রথমেই নজর পড়ে, তা হলো ওজন নিয়ন্ত্রণ করা।
২ চামচ পিনাট বাটারের পুষ্টিগুণ
২ চামচ পিনাট বাটারে অর্থাৎ প্রতি ৩২ গ্রামে-
- ক্যালরির পরিমাণ থাকে ১৯১;
- চর্বির পরিমাণ থাকে ১৬ গ্রাম;
- স্যাচুরেটেড ফ্যাট এর পরিমাণ ৩ গ্রাম;
- মনোস্যাচুরেটেড ফ্যাট এর পরিমাণ থাকে ৮ গ্রাম;
- পলিআনস্যাচুরেটেড ফ্যাট এর পরিমাণ ৪ গ্রাম।
আপনারা তিস্তা ফুড থেকে ১০০ ভাগ খাঁটি ও নিজস্বভাবে বানানো সেরা মানের পিনাট বাটার পাবেন। আমাদের থেকে অর্ডার করতে ওয়েবসাইটে পিনাট বাটার এর পেইজে ভিজিট করুন অথবা কল করুন +8801737084429 এই নম্বরে।
ওজন বাড়াতে পিনাট বাটার খাওয়ার নিয়ম
পিনাট বাটার খাওয়ার নিয়ম হিসেবে স্বাস্থ্য বজায় রাখতে দৈনিক ১ থেকে ২ টেবিল চামচের বেশি খাওয়া উচিত না। কিন্তু ওজন বাড়াতে স্বাভাবিক মাত্রা থেকে একটু বেশি খেতে হবে। তবে মাথায় রাখতে হবে যে বেশি খাবেন মানেই অতিরিক্ত নয়। প্রয়োজনে কোন অভিজ্ঞ লোকের থেকে পরামর্শ নেওয়া উচিত। আমরা আপনাদের কিছু টিপস দিতে পারি যাতে আপনার ওজন বাড়ে। যেমন-
- দৈনিক ক্যালরি গ্রহণ করা বাড়ান।
- স্বাস্থ্যকর খাবারের সাথে পিনাট বাটার মিশিয়ে খান।
- নিয়মিত ব্যায়াম করুন এবং
- ধৈর্যধারণ করুন।
উপরের বিষয়গুলোর সাথে নিচে আরও বিস্তারিতভাবে লেখার চেষ্টা করছি।
দৈনিক ক্যালরি গ্রহণ বাড়াতে হবে
আপনি আপনার দৈনিক ক্যালরি বাড়াতে বা নির্ধারণ করতে অনলাইনে ক্যালকুলেটর ব্যবহার করে ৩০০ থেকে ৫০০ ক্যালরি প্রতিদিন বাড়ান। আমরা যদি আমাদের ক্যালরি বাড়াই, তাহলে আমাদের ওজন এমনিই বাড়বে। অর্থাৎ, আমরা যতটুকু ক্যালরি আমাদের কাজের মাধ্যমে কমাই, তার থেকে বেশি ক্যালরি গ্রহণ করলেই আমাদের ওজন বৃদ্ধি পাবে।
স্বাস্থ্যকর খাবারের সাথে খাবেন
শুধু পিনাট বাটার খেয়েই আপনি ওজন বাড়াতে পারবেন। কিন্তু আপনি যদি স্বাস্থ্যকর খাবারের সাথে এই খাবার মিশিয়ে খান তাহলে ভালো উপকার পাবেন। তাই একে পাউরুটি, টোস্ট, ফলমূল, শাকসবজির সাথে খেতে পারেন। এতে ক্যালরির পাশাপাশি আরও অন্যান্য নানা পুষ্টিকর উপাদান পাবেন। রাতে খেজুর খাওয়ার পাশাপাশি পিনাট বাটারও খেতে পারেন।
এই গ্রীষ্মের গরমে ঘি খাওয়ার উপকারিতা কি তার বিস্তারিত বর্ণনা জানতে এখানে ক্লিক করুন।
নিয়মিত ব্যায়াম করুন
সপ্তাহে ৩/৪ দিনে অন্তত ৩০ মিনিট করে ব্যায়াম ও অন্যান্য শারীরিক প্রশিক্ষণ নেওয়ার চেষ্টা করুন। এতে আপনার ওজনও বাড়বে, শরীরে বাড়তি মেদও জমবে না। আমাদের শরীর ঠিক রাখতে নিয়মিত ব্যায়ামের কোনো বিকল্প নেই। আমাদের দেহের পেশি শক্তি বাড়াতে এবং ওজন বাড়ানোর সাথে সাথে নিজেদের ফিট রাখতে ব্যায়াম করতেই হবে। পিনাট বাটারে থাকা প্রোটিন আমাদের পেশির টিস্যুগুলোকে মেরামত করতে সাহায্য করে এবং কার্বোহাইড্রেট শরীরে ব্যায়ামের সময় শরীরে শক্তি প্রদান করে।
ধৈর্যধারণ করতে হবে
ওজন কমানোর চেয়ে ওজন বাড়াতে কম সময় লাগলেও সময় তো আমাদের লাগবেই। আপনার শরীর রোগা বা পাতলা হলে কোনোভাবে হতাশ হওয়া যাবে না। আপনি যদি দ্রুত ফলাফল দেখতে না পান, তাহলে সময় নিয়ে ধৈর্য সহকারে চেষ্টা করতে থাকুন।
পিনাট বাটার খেলে কি ওজন কমে?
হ্যাঁ। যেমন বেশি করে পিনাট বাটার খেলে মোটা হওয়া যায়, তেমনি নিয়ম করে ডায়েট মেনে খেলে ওজন কমবে। সাধারণত অনেকে কম খেয়ে শরীরে বেশি শক্তি সরবরাহ করে অর্থাৎ অতিরিক্ত ক্যালরি গ্রহণ না করে ওজন কমাতেই এই বাটার খেয়ে থাকেন। বিশেষ করে যারা পেশা হিসেবে ব্যায়াম বা শারীরিক চর্চা করে থাকেন, তারা তাদের ডায়েট চার্টের তালিকায় এই পিনাট বাটার কে রাখেন। যেহেতু এটি খেলে ক্ষুধা নিবারণ হয়, তাই আপনি নিয়মিত ১ থেকে ২ টেবিল চামচ করে খেতে পারেন যা আপনার ওজন কমাতে সাহায্য হবে।
আমরা আমাদের অন্য পোস্টে বাচ্চাদের ঘি খাওয়ার নিয়ম, পুষ্টি উপাদান ও রাতে খাওয়ার উপকারিতা নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেছি। পোস্টটি পড়তে চাইলে এখানে ক্লিক করে পড়ে নিন।
পিনাট বাটার এর অপকারিতা
সবার জন্য পিনাট বাটার খাওয়া উচিত নয়। এতে যেমন অনেক বেশি পুষ্টি উপাদান আছে, তেমনি কিছু কিছু মানুষের স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর।
পিনাট বাটারের অপকারিতা হলো, যারা ত্বকের অ্যালার্জিতে ভোগেন তারা এই পিনাট বাটার এড়িয়ে চলতে পারেন। অ্যালার্জি থাকাকালীন এই খাবারটি খেলে আপনার সমস্যা আরও বাড়তে পারে। এই খাবারের ৮০% ই বাদাম, তাই না খাওয়াই ভালো। ওজন বেশি হলেও যারা ডায়েট বা নিয়ম মেনে খেতে পারবেন না, তাদের এই খাবার এড়িয়ে চলবেন।
পিনাট বাটার কিডনি রোগীদের জন্য খুব একটা ভালো নয়। যাদের কিডনিজনিত সমস্যা আছে, তারা খাবেন না। এজন্য এসব সমস্যা থাকলে চিকিৎসকের থেকে পরামর্শ নিয়ে খাওয়া উচিত। আপনি চাইলে মধু বা খেজুর অর্ডার করে নিয়মিত খেতে পারেন।
পিনাট বাটার কোথায় পাওয়া যায়?
আপনি অনেক জায়গা থেকেই পিনাট বাটার অর্ডার করতে পারেন যেমন দোকান থেকে, কোনো সুপারশপ থেকে বা অনলাইন থেকে। কিন্তু, আমাদের বিশ্বাস আপনি আমাদের তিস্তা ফুড এর চেয়ে খাঁটি ও ভালো কোয়ালিটির পিনাট বাটার বর্তমান বাজারে এতো সুলভ মূল্যে পাবেন না। কারণ, আমরা নিজেরা এটি তৈরি করে থাকি। কোনো বাড়তি মেশিন বা ফ্যাক্টরিতে তৈরি হয় না। তাছাড়া উৎকৃষ্ট মানের মধু, আমাদের নিজেদের বানানো খাঁটি গাওয়া ঘি অথবা মাখন ও পিঙ্ক সল্ট দিয়ে তৈরি হয় বলে আমাদের পণ্যটি সবচেয়ে নিরাপদ। আপনি ওজন বাড়াতে বা কমাতে চান, এই দুই ক্ষেত্রেই আমাদের তিস্তা ফুডের নিজস্ব হাতে বানানো পিনাট বাটার আপনার ভরসার কারণ হতে পারে।
আমরা পরবর্তী পোস্ট থেকে কালোজিরা ফুলের মধু নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করবো। সাথে আপনার প্রয়োজনীয় জিজ্ঞাসা সহ অন্যান্য প্রশ্নগুলোর উত্তর দেয়ার চেষ্টা করবো। আপনাদের আজকের বিষয় নিয়ে কোনো প্রশ্ন বা মতামত থাকলে আমাদের কমেন্ট বক্সে জানাতে পারেন।
তথ্যসূত্র
Alpino- Peanut Butter for Weight Management: How It Can Help You Lose or Gain Weight