You are currently viewing সরিষা ফুলের মধু চেনার উপায় এবং সরিষা ফুলের মধু খাওয়ার নিয়ম কি?

সরিষা ফুলের মধু চেনার উপায় এবং সরিষা ফুলের মধু খাওয়ার নিয়ম কি?

আমরা আগের পোস্টে খলিশা ফুলের মধু চেনার উপায় ও উপকারিতা নিয়ে পুরোপুরি বিস্তারিত ভাবে লিখেছিলাম। আজ আমরা সরিষা ফুলের মধু চেনার উপায়, এর বৈশিষ্ট্য এবং এই বেশ পরিচিত সরিষা ফুলের মধু খাওয়ার নিয়ম নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করবো।

সরিষা ফুলের মধু সংগ্রহের সময়

সরিষা ফুলের মধু কখন পাওয়া যায়?

বাংলাদেশে সাধারণত নভেম্বর থেকে ডিসেম্বর মাসে সরিষা ফুলের মধু পাওয়া যায়। কারণ, এই সময়ে অর্থাৎ নভেম্বর থেকে ডিসেম্বরে সরিষা ফুল বেশি ফোটে। এমনকি এখন জানুয়ারী মাসেও এই ফুলের মধু পাওয়া যায়। এই মধু খলিশা ফুলের মধুর মতো শুধু প্রাকৃতিকভাবেই পাওয়া যায় না। অনেক মধু চাষিরা কৃত্রিমভাবেও সংগ্রহ করে থাকেন।

তাই এই মৌসুমে সরিষা ফুল ফুটলে চাষিরা তাদের মৌমাছির বাক্সগুলো ক্ষেতের আশেপাশে বসিয়ে দেয়। তখন মৌমাছি মধু নিয়ে এসে বাক্সে জমা করে। আর এভাবেই ১০০ ভাগ খাঁটি ও আসল মধু সংগ্রহ করা হয়। বাংলাদেশে এই ফুলের মধুর উৎপাদন ও চাহিদা দিন দিন বেড়েই চলছে। উত্তরাঞ্চলের বগুড়া, সিরাজগঞ্জ, পাবনা, জয়পুরহাট সহ এখন বিভিন্ন অঞ্চলে মধুর চাষ বাড়ছে। মূলত সরিষা ফুল থেকে মৌমাছি যে মধু নেয়, সেটিই আমাদের দেশে সরিষা ফুলের মধু নামে পরিচিত।

খাঁটি সরিষা ফুলের মধুর বৈশিষ্ট্য

সরিষা ফুলের মধু চেনার উপায় কি?

আমরা যেমন আলাদা করে খলিশা ফুলের মধু কিভাবে চিনবো তা জানতে পারি, সরিষা ফুলের মধু চেনার উপায় অনেকগুলো রয়েছে। বর্তমান সোশ্যাল মিডিয়া এর বদৌলতে আপনি কয়েকটি উপায় নিজে থেকেই জানেন। আমরা আপনাদের জন্য সরিষা ফুলের মধু চেনার উপায় অর্থাৎ এই সরিষা ফুলের মধু্র বৈশিষ্ট্য নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করবো-

  • সরিষা ফুলের মধু দেখতে অন্যান্য মধুর চেয়ে ঘন হয়।
  • এই মধু ফ্রিজে বা ঠাণ্ডা জায়গায় রাখলে জমে যাবে। কারণ এতে গ্লুকোজের পরিমাণ বেশি রয়েছে।
  • গরমকালে আপনি এই মধু বেশি জমাট বাঁধবে না। 
  • সরিষা ফুলের মধুর স্বাদ অনেক ভালো, কিন্তু মাঝে মাঝে ঝাঁঝালো স্বাদ পাওয়া যায়।
  • এই মধুতে সরিষার ফুলের সুন্দর ঘ্রাণ পাবেন। গ্রেডের পার্থক্য হলে বা কম গ্রেডের মধু হলে ঘ্রাণ ও স্বাদ কমে যায়।
  • পাতলা থাকার সময় ফ্যানা দেখা যায়। ঘন হলেও মাঝে মাঝে ফ্যানা দেখা যাবে।
  • প্রথমে দানাদার আকৃতির থাকবে। হাতে নিলেও সেই দানাদারভাব হালকা বোঝা যাবে। কিন্তু মুখে দিলেই মধু গলে যাবে।
  • শীতকালে মধু একেবারে জমে ক্রিমের মতো হয়ে যাবে। একে ‘ক্রিস্টাল হানি’ বলা হয়।

মূলত এইসব দেখেই আপনি অনায়াসে যাচাই করে ফেলতে পারবেন যে এটি সরিষা ফুলের খাঁটি মধু। তাছাড়া সাধারণ ভাবে খাঁটি মধু চিনে বা ল্যাবে টেস্ট করে আরও ভালোভাবে মধু চেনা যায়, কিন্তু আমাদের মতো সাধারণ মানুষদের জন্য ল্যাব টেস্ট করা সহজ কাজ নয়। আপনি চাইলে অন্যান্য পরীক্ষা দ্বারা যাচাই করতে পারবেন। এতে কোন সমস্যা নেই।

আপনি চাইলে আমাদের মোবাইল নম্বরে খাঁটি ও ভালো গ্রেডের সরিষা ফুলের মধু এর জন্য অর্ডার পারেন। অর্ডার পেয়ে আমরা আপনাকে মধু ডেলিভারি করার নিশ্চয়তা দিচ্ছি। আমাদের মোবাইল নম্বর- +8801737084429। এখনই অর্ডার করুন।

সরিষা ফুলের মধু খাওয়ার নিয়ম

সরিষা ফুলের মধু খাওয়ার নিয়ম

যেহেতু পুষ্টিবিদদের মতে, সরিষা ফুলের মধুতে যথেষ্ট পরিমাণে প্রাকৃতিক গ্লুকোজ ও ফ্রুকটোজ থাকে, তাই এই মধু অন্যান্য মধুর চেয়ে দ্রুত জমে যায়। সরিষা ফুলের মধু খাওয়ার নিয়ম হচ্ছে-

  • ১ থেকে ২ চামচ সরিষা ফুলের মধু ১ গ্লাস পানিতে মিশিয়ে খাবেন।
  • পাউরুটির সাথে মিশিয়ে ২ টেবিল চামচ সরিষা ফুলের মধু মিশিয়ে খাবেন।
  • ১ থেকে ২ টেবিল চামচ সরিষা মধু জেলি এর পরিবর্তে টোস্টে মাখিয়ে খাবেন।
  • চিনির পরিবর্তে ১ চামচ সরিষা মধু খাবেন খেতে পারবেন।
  • ১০০ গ্রাম থেকে ২০০ গ্রাম সরিষা ফুলের মধু বাদামের সাথে বা অন্যান্য ফল বা শুকনো ফলের (Dry Fruit) সাথে মিশিয়ে খাবেন খেতে পারেন।

আমরা উপরের বর্ণিত এই সরিষা মধু খাওয়ার নিয়মগুলো বিস্তারিত তুলে ধরছি-

পানিতে মিশিয়ে খাবেন

এই মধু খাওয়ার সবচেয়ে সহজ উপায় হলে ১ থেকে ২ চা চামচ মধু ১ গ্লাস পানির সাথে ভালোভাবে মিশিয়ে খেলে পেট ভালো থাকবে ও হজমশক্তি বাড়বে। কিন্তু আপনি খালি পেটে সকালে ও রাতে ঘুমানোর প্রায় ১ ঘণ্টা আগে নিয়ম করে কম করে হলেও ১ চা চামচ মধু খেলে অনেক ক্ষতিকর রোগ থেকে মুক্তি পাবেন।

মধু জেলির বিকল্প হিসেবে ব্যবহার হয়

খাবার জেলি এর পরিবর্তে খেতে পারবেন

আমরা একবার হলেও অনেকে সকালে জেলি দিয়ে বিস্কুট, পাউরুটি খেয়েছি। অনেকে স্কুলে টিফিন হিসেবেও আমরা রুটিতে জেলি মাখিয়ে নিয়ে যেতাম। তখনকার সময়ে আমাদের খাবারের গুণগত মান যথেষ্ট উন্নত ছিলো। কিন্তু, বর্তমানে আমরা যেসব খাবার খাই, সেসব খাবারের বেশির ভাগই অস্বাস্থ্যকর। এসব ভেজাল খাবারের ভিড়ে আমরা নির্দিষ্ট মৌসুমে জেলির পরিবর্তে খাঁটি সরিষা ফুলের জমাট মধু ১ বা ২ চামচ পাউরুটি বা বিস্কুটে মাখিয়ে খেতে পারি এবং পুরনো দিনের সেই ছোটবেলার স্মৃতির পুনরাবৃত্তি করতে পারি। প্রতিদিন সকালের খাবার বা সন্ধ্যায় আমরা খেতে পারি।

চিনির পরিবর্তে খেতে পারেন

আমরা সবাই জানি, আমাদের জীবনে চিনির ভূমিকা কত বেশি। আমরা আমাদের জীবনে প্রচুর পরিমাণে চিনি খেয়ে থাকি। American Heart Association (AHA) এর মতে, একজন স্বাভাবিক মানুষ দিনে প্রায় ১২৬.৪ গ্রাম চিনি গ্রহণ করে। তাদের মতে, দিনপ্রতি ছেলেদের ৯ চা চামচের বেশি অর্থাৎ (৩৫ গ্রাম বা ১৫০ ক্যালরি) এবং মেয়েদের ৬ চা চামচ অর্থাৎ (২৫ গ্রাম বা ১০০ ক্যালরি) এর বেশি চিনি খাওয়া উচিত না।

তবে, আমরা যদি চিনি খাওয়ার পরিমাণ আরও কমিয়ে দেই? আমরা চাইলে এই সরিষা ফুলের মধু বা ক্রিস্টাল হানি কে চিনির বিকল্প হিসেবে ব্যবহার করতে পারি। চা হোক, দুধ হোক কিংবা শরবত, এই ফুলের মধুর নিয়মিত ব্যবহার আমাদের শরীরের সমস্ত ক্লান্তি দূর করে শরীরকে প্রতিদিন নতুন শক্তি দিবে। এক্ষেত্রে ১ চামচ পরিমাণ মধু আমাদের চিনির পরিবর্তে নিলে ভালো ফল পাওয়া যায়। আপনি যদি প্রতি সকালে খালি পেটে মধু খান, তাহলে এর নানা উপকার লক্ষ্য করতে পারবেন। এমনকি রাতেও খেতে পারেন।

বাদামের সাথে মধু মিশিয়ে খাওয়া হয়

বিভিন্ন ফল ও বাদামের সাথে মিশিয়ে খেতে পারবেন

আমরা সবাই বাজারে বিক্রি করা বিভিন্ন মুখরোচক খাবারের কথা জানি যা আমরা একবার হলেও খেতে চাই। এই খাবারগুলোর মধ্যে বর্তমানে মধুময় বাদাম বা ‘হানি হাট’ এর প্রশংসা দিন দিন বেড়েই চলছে। অনেকে এই খাবার কে অন্য ধরনের বিশেষ ঔষধ ভেবে থাকেন। আসলে এটি মোটেও তেমন কোন খাবার নয়; তবে এতে থাকা পুষ্টিকর উপাদান আমাদের শরীরের কার্যক্ষমতা বাড়ায়। ১০০ থেকে ২০০ গ্রাম সরিষা ফুলের খাঁটি মধু আপনি বিভিন্ন ফল বা শুকনো ফল (Dry Fruit) এর সাথে মিশিয়ে রেখে দিতে পারবেন। এরপর দিনে দুইবার, অর্থাৎ সকালে এবং বিকেলে একবার করে খেতে পারবেন।  এছাড়া সব রকমের বাদাম; বিশেষ করে (কাজু বাদাম, আখরোট, কাঠবাদাম) এর সাথে আপনি দেশের সবচেয়ে পরিচিত এই মধু মিশিয়ে খেলে উপকার পাবেন।

এছাড়াও আপনি নানাভাবে এই মধু খেতে পারবেন। যদি আপনি এসব নিয়ম ও উপায় পর্যবেক্ষণ করে এবং খাওয়ার নিয়ম অনুযায়ী ঠিকমত খান, তাহলে ধীরে ধীরে আপনি আপনার শারীরিক পরিবর্তন দেখতে পাবেন। পরবর্তী পোস্টে আমি আপনাদের সাথে সরিষা ফুলের মধুর উপকারিতা নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করবো।

 

প্রাথমিক অবস্থায় সরিষা ফুলের মধুর রং সোনালী বা হালকা হলুদ রঙের হয়। এর গন্ধ একটু কড়া হয় এবং মুখে দিলে সরিষা ফুলের গন্ধ আসবে। এই মধু জমাট বাঁধলে হালকা সাদা রঙের বা দুধের ক্রিমের রঙের মতো হয়ে যাবে।

অন্যান্য মধুর মতো সরিষা ফুলের মধু বেশি খেলেও পেটে ব্যথা, অস্বস্তিকর ভাব, মাথা ঘোরা, অতিরিক্ত গরম লাগা ইত্যাদি সমস্যা দেখা দিতে পারে।

 

তথ্যসূত্র

American Heart Association- Is honey healthy? How to make sure you don’t get stung

American Heart Association- Added Sugar

Shape- Is Honey Mustard Healthy? Here’s What You Need to Know

Epicurious: Pardon Me, Does Mustard Need to Be Refrigerated?

Mobasher Khan

Mobasher Khan is a skilled content writer with expertise in SEO. He has successfully contributed to companies like Tista and Tista Food, where his engaging content and SEO skills were highly valued. Mobasher sharpens his writing and digital skills through research and technical writing. He was the runner-up in Content Mania, showcasing his talent for creating compelling content. Beyond work, Mobasher loves exploring different industries and writing. His diverse interests fuel his creativity and versatility as a content writer. Mobasher is dedicated to excellence and continually seeks new learning opportunities to help organizations succeed.

Leave a Reply