You are currently viewing খেজুরের পুষ্টিগুণ অনুসারে আপনার দিনে কয়টা খেজুর খাওয়া উচিত?

খেজুরের পুষ্টিগুণ অনুসারে আপনার দিনে কয়টা খেজুর খাওয়া উচিত?

ফলের মধ্যে খেজুরকে সবচেয়ে পুষ্টিকর ও স্বাস্থ্যসম্মত ফল হিসেবে ধরা যায়। বিশেষত, এই খেজুরের স্বাস্থ্য উপকারিতা সম্পর্কে কমবেশি সবারই মোটামুটি ধারণা রয়েছে। এমনকি, রমজান মাসে খেজুরের জনপ্রিয়তা অন্যান্য সময়ের চেয়ে বহুগুণ বেড়ে যায়। তবে আমাদের ভালো ফলাফল পেতে অবশ্যই নিয়মিত খেজুর খাওয়া উচিত। আজ আমরা এই পোস্টে প্রতি দিনে কয়টা খেজুর খাওয়া উচিত তা নিয়েও আলোচনা করব।

একটি পাত্রে বিশুদ্ধ টাটকা খেজুর। সাথে দিনে কয়টা খেজুর খাওয়া উচিত তা নিয়ে আলোচনা

বাংলাদেশের বাজারে প্রায় ১০০টিরও বেশি প্রজাতির খেজুর পাওয়া যায়, কিন্তু আমরা অনেকে নাম জানি না। এদের মধ্যে মাবরুম, মরিয়ম, সুক্কারি, সুগাই, ভিআইপি(মেডজুল), মাশরুক, আম্বার, আজওয়া খেজুর বেশ পরিচিত।

দিনে কয়টা খেজুর খাওয়া উচিত?

একজন সুস্থ মানুষ দিনে ৩ থেকে ৪ টি খেজুর খেতে পারবেন। ব্যায়াম কিংবা শারীরিক পরিশ্রমের পর দিনে ৫ থেকে ৬ টি খেজুর খেলে শরীরে শক্তি ফিরে পাবেন। সকালের এবং বিকালের নাস্তায় খেজুর খেলে উপকার পাওয়ার সম্ভাবনা থাকে। আপনি যদি রাতে দুধের সাথে খেজুর মিশিয়ে খেতে পারেন, তাহলে ১ সপ্তাহের মধ্যে এর অনেক উপকার আপনি পাবেন। একজন ব্যক্তি দিনে কয়টা খেজুর খেতে পারবেন তা পুরোপুরি নির্ভর করে ওই ব্যক্তির শারীরিক সক্ষমতার ওপর।

  • যারা ব্যায়াম বা কায়িক পরিশ্রম করেন তারা ৫ থেকে ৬ টি খেজুর খেতে পারেন। এতে আপনি আপনার শরীরে বেশ শক্তি পাবেন।
  • যারা ওজন নিয়ে দুশ্চিন্তায় আছেন এবং ওজন বাড়াতে চান তারা রাতে দুধের সঙ্গে ৪ থেকে ৫ টি খেজুর মিশিয়ে খেলে বেশ উপকার পাবেন।
  • গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো, যারা ওজন কমাতে চান, তারাও তাদের খাদ্যতালিকায় খেজুর যোগ করতে পারেন। এই খেজুরের উপকারিতাও অনেক।

পানির সাথে খেজুর মিশিয়ে

বয়স অনুসারে দিনে কয়টি করে খেজুর খাওয়া উচিত?

বিভিন্ন বয়স অনুসারে আমাদের খেজুরের সংখ্যার পরিবর্তন পারে। যেমন, শিশুদের জন্য ১ থেকে ২টি খেজুর এবং বয়স্কদের জন্য ২ থেকে ৩ টি খেজুর খাওয়া ভালো। আপনাদের সুবিধার জন্য তা বিস্তারিত তুলে ধরা হলোঃ

  • আপনার শিশুর বয়স ২ থেকে ৫ বছর হলে, ২ থেকে ৩ টি খেজুর খাওয়া ভালো।
  • শিশুর বয়স ৬ থেকে ১৩ বছর হলে, ৩ থেকে ৪ টি খেজুর দেয়া যেতে পারে।
  • কিশোর-কিশোরীদের বয়স ১৩ থেকে ১৮ বছর হলে, ৪ থেকে ৫ টি খেজুর খেলে তেমন কোন সমস্যা হবে না।
  •  যারা প্রাপ্তবয়স্ক হয়েছেন কিংবা যাদের বয়স ১৯ থেকে শুরু করে ৫০ বছর, তারা ৪ থেকে ৬ টি বা তার বেশি খেজুর খেতে পারবেন। কিন্তু, একসাথে অতিরিক্ত না খাওয়াই ভালো।
  • বয়স্ক ব্যক্তি অর্থাৎ যাদের বয়স ৫০ এর উপরে, তারা একটু কম করে খেজুর খাবেন। এক্ষেত্রে ৩ থেকে ৪ টি করে খেলে সবচেয়ে ভালো ফলাফল পাবেন।

আপনি খেজুরকে ‘চিনি’ এর বিকল্প হিসেবে ব্যবহার করতে পারেন। তাই চিনি এর পরিবর্তে বিভিন্ন খাবারে খেজুর দিয়ে পরিবেশন করা যায়। কিন্তু, খেজুরে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার থাকায় যদি আপনি বেশি পরিমাণে খান, তাহলে হজমের সমস্যা দেখা দিতে পারে। আপনি ডায়েট করতে চাইলে সেই ডায়েট চার্টে কতগুলো খেজুর রাখবেন তা নিয়ে খাদ্য বিশেষজ্ঞের সাথে পরামর্শ করে নিতে পারেন। সাধারণ নিয়ম হিসেবে, প্রতিদিন ৩ থেকে ৫ টি খেজুর সুস্থ থাকার জন্য যথেষ্ট।

আমাদের থেকে ভালো মানের খেজুর নিতে ভিজিট করুন- সেরা দামে সেরা খেজুর

খেজুরে বিদ্যমান পুষ্টিগুণ (প্রতি ২০০ গ্রামে)

খেজুর একটি পুষ্টিকর খাবার যা বিভিন্ন ধরনের পুষ্টি উপাদানে ভরপুর। আমরা এর পুষ্টির তালিকা বিস্তারিতভাবে তুলে ধরার চেষ্টা করছি যাতে আপনারা এই ফলের অসাধারণ গুণাগুণ সম্পর্কে জানতে পারেন। আমরা ২০০ গ্রাম খেজুরে বিদ্যমান পুষ্টি উপাদানের একটি বিস্তারিত তালিকা তুলে ধরছিঃ

প্রতি ২০০ গ্রাম খেজুরে বিদ্যমান পুষ্টিগুণ সমূহ বিস্তারিত

  • প্রোটিন: প্রোটিন আমাদের শরীরের টিস্যু তৈরি ও মেরামত করতে সাহায্য করে। প্রতি ২০০ গ্রাম খেজুরে ৩.৬২ গ্রাম প্রোটিন থাকে।
  • চর্বি: চর্বি হলো শরীরের শক্তির উৎস এবং এটি কোষের ঝিল্লী তৈরিতে সাহায্য করে। প্রতি ২০০ গ্রাম খেজুরে ০.৩০ গ্রাম চর্বি থাকে।
  • ক্যালরি: খেজুরে ক্যালরি হিসেবে ২০০ গ্রাম খেজুরে ৫৫৪ কিলোক্যালরি থাকে।
  • কার্বোহাইড্রেট: খেজুরে থাকা কার্বোহাইড্রেট শরীরের শক্তির প্রধান উৎস হিসেবে কাজ করে এবং ২০০ গ্রাম খেজুরে মোট ১৪৯.৯৪ গ্রাম কার্বোহাইড্রেট থাকে।
  • ফাইবার: এতে বিদ্যমান ফাইবার হজমশক্তি উন্নত করতে সাহায্য করে এবং কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে সাহায্য করে। খেজুরে প্রতি ২০০ গ্রামে ১৩.৪ গ্রাম ফাইবার থাকে।
  • খনিজ: খেজুরে প্রতি ২০০ গ্রামে ৭৮ মিলিগ্রাম ক্যালসিয়াম, ৪ মিলিগ্রাম সোডিয়াম, ১৩৯২ মিলিগ্রাম পটাশিয়াম, ০.৫৯২ মিলিগ্রাম ম্যাগনেসিয়াম এবং ১.৮ মিলিগ্রাম আয়রন থাকে।
  • ভিটামিন: খেজুরে ভিটামিন সি, ভিটামিন এ, ভিটামিন কে এবং ভিটামিন ই থাকে। প্রতি ২০০ গ্রাম খেজুরে ০.৮ মিলিগ্রাম ভিটামিন সি, ১২ মাইক্রোগ্রাম ভিটামিন এ, ৪.১৪ মাইক্রোগ্রাম ভিটামিন কে এবং ০.১ মিলিগ্রাম ভিটামিন ই থাকে।

এই তালিকা থেকে আমরা স্পষ্ট বুঝতে পারি যে, খেজুর শক্তি, ফাইবার, ভিটামিন এবং খনিজে সমৃদ্ধ একটি খাবার। এতে অ্যান্টিঅক্সিডেন্টও রয়েছে যা শরীরকে বিভিন্ন রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধিতে সাহায্য করে। খেজুর নিয়মিত খেলে হাড়ের স্বাস্থ্য, হজম, হৃৎপিণ্ডের স্বাস্থ্য এবং রক্তস্বল্পতা প্রতিরোধে সাহায্য করে।

Dates Eating According to Age

প্রতিদিন নিয়মিত খেজুর খেলে যে উপকার গুলো হয়

এভাবে দিনে নিয়মিত খেজুর খেলে যেসব মূল উপকার গুলো পাওয়া যায় সেগুলো হলোঃ

  • গ্লুকোজের ঘাটতি কমিয়ে ক্ষুদা নিবারণে সাহায্য করে।
  • অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এর মাধ্যমে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়।
  • খেজুরে বিদ্যমান ভিটামিন বি-৬ মস্তিষ্কের কার্যক্ষমতা বৃদ্ধি করে।
  • নিয়মিত খেজুর খাওয়ার ফলে কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা দূর হয়।
  • নিয়মিত খেজুর গ্রহণের ফলে চোখের রেটিনার কার্যকারিতা বৃদ্ধি করে দৃষ্টিশক্তি উন্নত হয়।
  • খেজুরে বিদ্যমান ম্যাগনেসিয়াম উচ্চ রক্তচাপ কমাতে সাহায্য করে।
  • আয়রনের ঘাটতি পুরণ করে শরীরের রক্ত উৎপাদনে সাহায্য করে এবং রক্তস্বল্পতা এর সমস্যা দূর করে।
  • এতে প্রচুর ক্যালসিয়াম থাকায় হাড়ের গঠন ও হাড়ের ক্ষয় রোধ করতে বিশেষভাবে সহায়তা করে। এটি হাড়ের সাস্থ্যের জন্য ভালো।

 

সাধারণ জিজ্ঞাসা

আপনি যদি ওজন কমাতে চান, তাহলে প্রতিদিন ৩ থেকে ৪ টি খেজুর এর বেশি খাবেন না। এতে প্রাকৃতিক শর্করা, শক্তি ও ভিটামিন থাকায় বেশি খেলে ওজন বেড়ে পারে। তাই নিয়মিত ও পরিমিত খাওয়াই ভালো।

১টি খেজুরে প্রায় ০.২৫ গ্রাম প্রোটিন রয়েছে। তবে জাত, ধরন, আকার এবং শুকনো কিংবা ভেজা অবস্থার উপর নির্ভর করে খেজুরে প্রোটিনের পরিমাণ কিছুটা কমবেশি হতে পারে।

খেজুর যেহেতু ফ্রুক্টোজের এর একটি বিশেষ উৎস, তাই এটি মিষ্টি হয়। আর এজন্যই একে চিনির বিকল্প হিসেবেও ব্যবহার করা যায়।

তথ্যসূত্র

খেজুর খাওয়ার নিয়ম

বয়সভেদে ডায়েট

Cholesterol And Dates

 

Mobasher Khan

Mobasher Khan is a skilled content writer with expertise in SEO. He has successfully contributed to companies like Tista and Tista Food, where his engaging content and SEO skills were highly valued. Mobasher sharpens his writing and digital skills through research and technical writing. He was the runner-up in Content Mania, showcasing his talent for creating compelling content. Beyond work, Mobasher loves exploring different industries and writing. His diverse interests fuel his creativity and versatility as a content writer. Mobasher is dedicated to excellence and continually seeks new learning opportunities to help organizations succeed.

Leave a Reply